মোঃ রবিউল হোসেন খান : খুলনা:
খুলনা সহ সারাদেশে লিজপ্রথা বাতিল ও সকল বকেয়া পাওনার দাবীতে খালিশপুর, দৌলতপুর কারখানা কমিটির উদ্যোগে বিজেএমসির জোন অফিস ঘেরাও ও অবস্থান কর্মসুচি পালন করেছে। খালিশপুর, দৌলতপুর কারখানা কমিটির যৌথ উদ্যোগে এ কর্মসুচি পালিত হয়।খালিশপুর,দৌলতপুর কারখানা কমিটির সভাপতি মো: মনির হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কাবীরের পরিচালনায় জোন অফিস ঘেরাও অবস্থান কর্মসুচিতে বক্তব্য রাখেন, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কাবীর, এসময় তিনি বলেন, রাস্ট্রায়ত্ত সকল মিলের লিজ বাতিল করতে হবে।খালিশপুর, দৌলতপুর মিল সহ অবিলম্বে ৫ টি মিলের ২০১৫ সালের পাওনা অনুযায়ী বকেয়া টাকা পরিশোধ করতে হবে। নোটিশ পে বাবদ ৮ সপ্তাহের বেসিকের সমান প্রাপ্য মজুরি প্রদান করতে হবে।শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক মিজানুর রহমানকে অপসারণ সহ বিজেএমসির সকল দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে।তিনি কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারন করে বলেন, আগামী ডিসেম্বরের ৫ তারিখের পাটকলের শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ না হলে খালিশপুর, দৌলতপুর জুট মিলের অভ্যন্তরে পানির লাইন, বিদ্যুতের লাইনের সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হবে।বিজেএমসির সকল কর্মকর্তাদের লাঞ্চিত করা হবে।যার কাছে যা কিছু পাওয়া যাবে কেড়ে নেওয়া হবে।আমরা বাচার মত বাচতে চাই মরার মত বাচতে চাই না।আমরা কারো কাছে ভিক্ষা চাই না,দয়া চাই না।আমাদের পাওনা টাকা নিয়ে কেন তালবাহানা করা হচ্ছে তার জবাব চাই। এসময় অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সহ বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেন, আমাদের পাওনা পরিশোধ করে দিলে আমরা সাগত জানাবো।আর যদি আমাদের বকেয়া পাওনার ফয়সালা না হয় তাহলে অন্তবর্তি সরকারকে আমরা ভাল চোখে দেখব না।বিগত সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রনালয়ে সাবেক দু মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী ও জাহাঙ্গীর কবীর নানক পাটকল গুলো বিদেশী চক্রান্ত ও ভারতের ” র” এর বুদ্ধিতে মোদী সরকারকে খুশি করবার জন্য এদেশের পাটকল গুলো বন্ধ করে শ্রমিকদের পাওনা থেকে বঞ্চিত করেছে। আর এর সাথে জড়িত বিজেএমসির কর্মকর্তারা।পাটকলের শ্রমিকদের নিয়ে যারা খেলছে তাদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তির ব্যবস্থা করুন। বর্তমান বিজেএমসির চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগের দোসর। আওয়ামীলীগের দোসর দিয়ে পাটকল চলবে না।বিগত সরকার এই পাটকল গুলো লস, ভর্তুকি দেখিয়ে ভন্ডামি করে বলেছে শ্রমিকরা পাটকল চলে না, শ্রমিকরা কাজ করে না।বিদেশি ভারতের দালালদের চক্রান্তে পাটকল গুলো আমলাদের কাছে দিয়ে দিয়েছে। এই ঘেরাও ও অবস্থান কর্মসুচি থেকে বলতে চাই, এই সরকারকে অবিলম্বে লিজ ভাড়া ভিত্তিক বন্ধ করুন। শ্রমিকদের সাথে তালবাহানা করবেন না।শ্রমিকরা রাস্তায় নামলে আপনাদের খুজে পাওয়া যাবে না।এদেশের শ্রমিক, ছাত্র,কৃষক মাতৃভূমি রক্ষায় নেতৃত্ব দিয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই ও ৫ আগষ্টের গনঅভ্যুত্থানে শ্রমিক, ছাত্র,জনতা বিগত ফ্যাসিস সরকারকে বঙ্গোপসাগরে নিক্ষেপ করেছে।শ্রমিকদের খেপিয়েন না।আমরা নিরিহ খেটে খাওয়া মেহনতি শ্রমিক। খালিশপুর জুট মিল, দৌলতপুর জুট মিল, কেএফসি জুট মিল,আরআরজুট মিল,এমএম জুট মিল এই পাঁচটি জুট মিলের শ্রমিক একটি টাকাও পায় নি কেন।আমাদের বকেয়া পরিশোধের জন্য ২০০ কোটি টাকা লাগে সেখানে ১৬০০ কোটি টাকা তখন জমা থাকলেও আমাদের পাওনা দেওয়া হয় নী।সাবেক মন্ত্রী লাখ লাখ কোটি টাকা লুটপাট করে শ্রমিকদের বঞ্চিত করেছে। প্রশাসন ও গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্দেশ্য বলেন,আমাদের সন্তান ও মেয়েরা অন্ধকারে ডুকে গেছে অভাবে।আজ ৫ বছর ধরে আমরা দাবী জানীয়ে আসছি।অবিলম্বে বিজেএমসিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হোক।জোনাল অফিসের প্রধান কর্মকর্তা ও শ্রম পরিচালক যৌথ ভাবে আমাদের ৬০ দিনে টাকা মেরে খেয়েছে বলে জানান।আমাদের দাবি অবিলম্বে পুরন না হলে রাজপথ, রেলপথ বন্ধ করে দিবো।প্রয়োজনে ঢাকায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে আত্মাহুতির আন্দোলন করবো। তিনি আজ ২০ নভেম্বর দুপুর ১২ টায় খালিশপুর চরেরহাট বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয় ঘেরাও ও অবস্থান কর্মসুচিতে এ কথা বলেন।এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, শ্রমিক নেতা নুর মোহাম্মদ, মোজাম্মেল হোসেন, আব্দুল আজিজ, মো: শফি,মোহাম্মদ আজিজ প্রমুখ। এদিকে পাটকল খুলনার আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান সমন্বয়ক কর্মকর্তা গোলাম রব্বানী( মহাব্যবস্থাপক) কে ৫ টি মিলের শ্রমিক বকেয়া পাওনা সহ বিভিন্ন দাবীতে কঠোর হুশিয়ারী দিয়েছে এ দাবি কতখানি যোক্তিক বা যোক্তিক থাকলে আপনাদের কি পরিকল্পনা আছে পরিশোধের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন,খুলনা অঞ্চলে ৯ টি পাটকল। ৭ টি মিলের পেমেন্ট হয়ে গিয়েছে। দু একজন মামলা জনিত কারণে না পেয়ে থাকতে পারে।আর বাকি দুটো জুটমিল অস্থায়ী ভিত্তিতে শ্রমিক খালিশপুর ও দৌলতপুর জুট মিল।এদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কোন টাকা আমাদের কাছে আসে নী।শ্রমিকরা কোন বকেয়া পাওনা পাবে কিনা এ বিষয়ে আমাদের জানা নেই। এটা সম্পুর্ন সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়।সরকার সব মিলের তথ্য নিয়ে পেমেন্ট দিয়েছে। আমাদের শ্রমিকদের তিনটা পার্ট স্থায়ী, অস্থায়ী ও বদলি।বদলি শ্রমিকের কিছু পাওনা ছিল সেটা আমরা দিয়েছি।৭ টি মিলের তথ্য সরকার চেয়েছে স্থায়ী শ্রমিককের আমরা দিয়েছি।আমাদের স্থায়ী শ্রমিক ছিল ১৫ হাজার ২ শত ২১ জন ১৪০৮৫ জন তাদের পাওনা পেয়েছে আর ১৬২ জনের আইডেন্টিটি করা যাচ্ছে না।৭ মিলের ১৪০৮৩ জন শ্রমিক থেকে সঞ্চয় পত্র পেয়েছে ১৪০০৪ জন।বাকি আছে ৭৯ জন।সরকার ৭৭৪ কোটি টাকা নগদ পেমেন্ট দিয়েছে বাকীটা সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে দিয়েছে। উল্লেখ্য খুলনা অঞ্চলের রাস্ট্রায়ত্ত জুট মিলের খুলনা অঞ্চলের ৯ টি মিলের মধ্যে ৪ মিল সরকার লিজ দিয়েছে আর ৫ টি বাকি আছে।লিজ দেওয়া মিল গুলো হলো ইস্টার্ন জুট মিল, কার্পেটিং জুট মিল,জেজে আই,দৌলতপুর জুট মিল।এর মধ্যে ইস্টার্ন ও কার্পেটিং জুট মিল ভারতের রিগয়ান কোম্পানীর কাছে ১৫ লাখ টাকা ভাড়া চুক্তিতে লিজ দিয়েছে। জেজেআই কে আকিজ গ্রুপ্রের কাছে ১৫ লাখ টাকায় ও দৌলতপুর জুট মিল ইউনি ফুটওয়্যার টেকনোলজি কোম্পানির কাছে সাড়ে ৯ লাখ টাকায় চক্তিতে ভাড়া দিয়েছে। এ লিজকৃত মিল গুলো আংশিক ভাবে চালাচ্ছে লিজে নেওয়া প্রতিষ্ঠান গুলো খোজ নিয়ে জানাগেছে। বাকি ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, স্টার,আলিম,খালিশপুর জুট মিল এখনো লিজ দেওয়া হয় নী।