(জয়পুরহাট)
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় জয়পুরহাটে ন্যায্য মূল্যের বাজার ‘ছাত্র-কৃষক কর্নারে’ ৫০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বাস্তবায়নে এ কার্যক্রম বেশ সাড়া ফেলেছে জেলাজুড়ে। প্রতিদিন ৫টি উপজেলায় বিভিন্ন পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ ট্রাক থেকে একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ৫ কেজি করে আলু কিনতে পারছেন। বাজারের চেয়ে কম দামে আলু কিনতে পেরে বেশ খুশি ক্রেতারা। এদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত এ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আলুর উৎপাদনে দেশের অন্যতম জেলা জয়পুরহাট। প্রতি মৌসুমে এ জেলায় প্রায় ১০ লাখ থেকে ১২ লাখ মেট্রিক টন পর্যন্ত আলু উৎপাদন হয়। তবে বর্তমানে স্বস্তি নেই জেলার আলুর হাট-বাজারগুলোতে। সংকটের কারণে হাট-বাজারে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। এ পরিস্থিতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে জয়পুরহাট শহরসহ ৫টি উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে শুরু হয়েছে ৫০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে, টাস্কফোর্সের সহযোগিতায় ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বাস্তবায়নে জেলার বিভিন্ন হিমাগার থেকে এসব আলু সংগ্রহ করে ভর্তুকি মূল্যে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। এখান থেকে একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ৫ কেজি আলু কিনতে পারছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। বাজারের চেয়ে কম দামে আলু কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা। কম দামে আলু কিনতে পেরে বেশ খুশি তারা।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা কুঠিবাড়ি ব্রিজ এলাকার ওবায়দুল ইসলাম বলেন, বর্তমান বাজারে আলু কিনতে গেলে কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। এ অবস্থায় জেলা প্রশাসন ও ছাত্রদের উদ্যোগে ৫০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। এভাবে কম দামে আলু পাওয়া গেলে আমরা উপকৃত হব। এ কার্যক্রম যেন চলতেই থাকে।
জামালপুরের ফাতেমা নামে এক নারী বলেন, বাজারে বর্তমান আমরা আলু কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি। এখানে ৫০ টাকা কেজিতে আলু পাওয়ায় আমরা অনেক খুশি।জয়পুরহাট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি কে.এম সাজিন বলেন, জয়পুরহাটে প্রচুর আলু চাষ হলেও সিন্ডিকেট করে এর দাম বাড়ানো হচ্ছে। এর প্রভাব বাজারে অনেকটা পড়েছে। বর্তমানে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণসহ সিন্ডিকেট ভাঙতে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বিভিন্ন হিমাগার থেকে আলু স্বল্পমূল্যে কিনে সেগুলো শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। সর্বনিম্ন আধা কেজি ও সর্বোচ্চ ৫ কেজি আলু বিক্রি করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাশেদুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি বাজারে আলুর দাম কিছুটা ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এজন্য বাজার নিয়ন্ত্রণে আমরা ছাত্রদের নিয়ে ৫০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি শুরু করেছি। প্রতিদিন ৫টি উপজেলার প্রতিটি পয়েন্টে ৩৫ থেকে ৪০ বস্তা করে আলু বিক্রি হচ্ছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত সাধারণ ক্রেতাদের কথা ভেবে এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।