জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় প্রভাবশালী জাকির হোসেনের লোকজনের বিরুদ্ধে রাতের আঁধারে কৃষক আব্দুর রশিদ ও অটোরিকশা চালক রসুল মিয়ার ঘরবাড়িতে হামলা-ভাঙচুর করে আসবাবপত্র পুকুরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এরপরে থেকে ঘর ছাড়া হয়ে পড়েছে ভুক্তভোগী পরিবার। এ ঘটনায় একজন আহত হয়ে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাত ১২ টার দিকে উপজেলার নাংলা ইউনিয়নের মুন্সী নাংলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মেলান্দহ থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গতকাল রাত ১২ টার দিকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আব্দুর রশিদ ও রসুল মিয়ার বাড়িতে হামলা করে জাকির হোসেনের লোকজন। এ সময় আতংক সৃষ্টি করতে ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়। পরে রশিদকে বাড়ি থেকে বের করে হত্যার উদ্দ্যেশে মারধর করলে গুরুতর আহত হয়। আহত রশিদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় আব্দুর রশিদ ও রসুল মিয়ার বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট ও আসবাবপত্র তছনছ করে পুকুরে ভাসিয়ে দেয় জাকির হোসেনের লোকজন। এ ঘটনায় আব্দুর রশিদের স্ত্রী মোছা. চায়না বেগম বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ও ১৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, রাত ১২ টার দিকে হঠাৎ ডাক-চিৎকার ও ভাঙচুরের শব্দ শোনা যায়। তবে ঘরবাড়ি কে বা কারা ভাঙচুর করছে তা দেখিনি। সকালে দেখি ঘরবাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। সকাল বেলা পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসেছিল। আব্দুর রশিদের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে জাকির হোসেনের লোকজনের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। সেই বিরোধের জেরধরে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা কওে জাকির হোসেনর লোকজন। এ সময় রশিদকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে তাঁরা হামলা করে। ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলে। ভেঙে জিনিসপত্র সবকিছুই পুকুরে ফেলে দেন। তারপর থেকে ঘরবাড়ি ছাড়া হয়ে পড়েছে তাঁরা। ভুক্তভোগী রশিদের মা রওশনারা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেকে মারার জন্য বাড়িতে হামলা করে। আমার ছেলেকে প্রায় মেরে ফেলেছিল। ঘরবাড়ি জিনিসপত্র সবকিছুই পুকুরে ফেলে দিয়েছে। রাত থেকে আমারা আর বাড়িতে যেতে পারিনি। রাস্তার পাশে বসে আছি। আমাদের কোন খাওয়া-দাওয়া নেই। ছেলের হাত কেটে দিয়েছে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।’ এ বিষয়ে জাকির হোসেন বলেন, ‘আমি ঢাকায় থাকি, ঢাকাতেই প্রেক্টিস করি। কবরস্থানের জায়গা নিয়ে সমস্যা। ৩০ বছর আগের কবরস্থানের জায়গা, কবরস্থানের দখলেই আছে। এসব ঘটনার সাথে আমি জড়িত না। আমি ঢাকা থাকা অবস্থায় কেউ অভিযোগ করলে তা মিথ্যা অভিযোগই হবে। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আহত আব্দুর রশিদের বোন পারভীন আক্তার বলেন, ‘আমাদের কেনা জায়গায় তারা দখলে যেতে দেয়না। এর আগেও একবার গিয়েছিলাম তখনও ঘরবাড়ি ভেঙে চুরমার করে দিয়েছিল। গতরাতে নতুন করে ৭-৮জন মিলে আবারও সব ভেঙে ফেলে। এ সময় আমার ভাই বাঁধা দিতে গেলে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করে। আমরা এখন বাড়ি ছাড়া। তারা হুমকি দিচ্ছে বাড়িতে যে যাবে তাকেই মেরে ফেলবে।’ অভিযুক্তরা বলেন, ‘কবরস্থানের জায়গা দখল করার জন্য তারা নিজেরাই রাতে নিজেদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেছে। ভাঙচুর করে সমাজের লোকজনকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। নিজেরা নিজেদের ঘর বাড়ি ভাঙচুর করে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে মেলান্দহ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তারিকুল হাসান হিমন বলেন, ‘রাতে একজন ব্যক্তি আহত অবস্থায় থানায় আসে। এরপর আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এখনো অভিযোগ হয়নি অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জামালপুর থেকে জাকিরুল ইসলাম বাবু
আমাদের নিউজ পোর্টালের যে কোন সংবাদ কপি করা দন্ডনীয় অপরাধ। আমরা সর্বদা সত্য ন্যায় সচ্ছতা ও সঠিক নিউজ প্রকাশে বদ্ধ পরিকর। দৈনিক যুগবাহক দেশের ও দেশের মানুষের সেবাই সর্বদা নিয়জিত।