আব্দুস সামাদ
পাটগ্রাম লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাট জেলায় কৃষি পণ্য পরিবহনে ঘোড়ার গাড়ির কদর দিনের পর দিন বাড়ছে। জীবন ও জীবিকার তাগিদে সময়ের চাহিদা মেটাতে মানুষ একেক সময় একেক পেশা বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে। কয়েক বছর আগেও লালমনিরহাট জেলায় ঘোড়ার গাড়ির কথা খুব একটা ভাবার বিষয় ছিল না। এ জেলায় একমাত্র ঐতিহ্যবাহী বাহন বলতে ছিল গরু ও মহিষের গাড়ি। গরুর গাড়িকে নিয়ে কবি, সাহিত্যিক, শিল্পীরা কতইনা বন্দনা করেছেন। গরু ও মহিষের গাড়ির চাকাসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ প্রস্তুত, ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত ছিল হাজারও মানুষ। অনেক স্থানেই এটি শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি পায়। কিন্তু কালের চাহিদা মেটাতে গিয়ে গরু ও মহিষের গাড়ি এ জেলা থেকে বিলুপ্ত হওয়ার পথে।
ঘোড়ার গাড়ি লালমনিরহাট জেলায় কৃষি পণ্য পরিবহনে ঘোড়ার গাড়ির কদর বাড়ছে বিগত কয়েক বছর থেকে লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম উপজেলায় উৎপাদিত কৃষি পণ্যসহ মালামাল পরিবহনে ঘোড়ার গাড়ির প্রচলন শুরু হয়। ভ্যান সদৃশ গাড়ির সামনে ঘোড়া জুড়ে দিয়ে বাহনটি চলে। তিস্তা, ধরলা, রত্নাই নদীর চরসহ প্রত্যন্ত গ্রামের রাস্তা ঘাটের অভাবে যেখানে কোনো যান্ত্রিক বাহন চলাচল করে না সেখানে এই ঘোড়ার গাড়িই একমাত্র ভরসা। জমি থেকে উৎপাদিত ফসল গোলায় নিয়ে যেতে জুড়ি নেই বাহনটির। দিন দিন ঘোড়ার গাড়ির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে এসব এলাকাগুলোতে।
সরেজমিনে লালমনিরহাটের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে ক্ষেত থেকে কৃষি পণ্য পরিবহনে ঘোড়ার গাড়ির ব্যাপকতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি পণ্য পরিবহনে অনেক ঝক্কি-ঝামেলার কারণে ব্যবহৃত হচ্ছে এই ঘোড়ার গাড়ি। কৃষি পণ্য নিয়ে তিস্তা, ধরলা, রত্নাই নদী পার হয়ে আসছে ঘোড়ার গাড়ি কিংবা চর পেরিয়ে কেউবা কৃষি পণ্য নিয়ে যাচ্ছেন তিস্তা, ধরলা, রত্নাই নদীর ওপারে লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম উপজেলায়।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কোদালখাতা এলাকা দিয়ে প্রতিদিন ঘোড়ার গাড়িতে কৃষি পণ্য, শাক, সবজি পরিবহন হচ্ছে।
জানা যায়, গাড়ি তৈরির খরচ ও ঘোড়ার দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকায় অনেকেই এটিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করছে। গাড়ি চালানোর উপযোগী একটি ঘোড়া ৩৫হাজার থেকে ৪০হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যায় বলে তারা জানান।
এ পেশাকে পাকাপোক্ত করতে চরাঞ্চলে অনেকে ঘোড়া পালনও করছেন।
ঘোড়ারগাড়ি চালক জানান, মালামাল বহন করে প্রতিদিন ৫শত থেকে ৭শত টাকা আয় হয়। ঘোড়ার খাদ্যের যোগান দিয়েও এতে তার সংসার চলে। গরুর চেয়ে ঘোড়ার দাম কম এবং তেমন ঝুঁকি নেই বলেও জানান।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় লালমনিরহাট জেলা থেকে ঐতিহ্যবাহী গরু ও মহিষের গাড়ি বিলুপ্ত হওয়ার উপক্রম হলেও তার স্থান দখল করে নিয়েছে এই ঘোড়ার গাড়ি।
আমাদের নিউজ পোর্টালের যে কোন সংবাদ কপি করা দন্ডনীয় অপরাধ। আমরা সর্বদা সত্য ন্যায় সচ্ছতা ও সঠিক নিউজ প্রকাশে বদ্ধ পরিকর। দৈনিক যুগবাহক দেশের ও দেশের মানুষের সেবাই সর্বদা নিয়জিত।