আব্দুল হান্নান
জেলা প্রতিনিধি বগুড়া
বগুড়ার শাজাহানপুরে মনজেলা খাতুন (২০) নামের তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার চোপিনগর ইউনিয়নের কামারপাড়া পূর্বপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের পরিবারের দাবি, মনজেলাকে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।মনজেলা খাতুন চোপিনগর ইউনিয়নের কামারপাড়া মণ্ডলপাড়া গ্রামের রাজিবুল প্রামাণিকের মেয়ে। তিনি কামারপাড়া পূর্বপাড়া গ্রামের তুহিন বাবুর (২১) স্ত্রী। দুই বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়। তুহিনের স্থানীয় দরিকুল্লা বাজারে খাবারের দোকান আছে। মনজেলার লাশ উদ্ধারের বিষয় আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন শাজাহানপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সাইদ। মনজেলার শাশুড়ি মমতাজ খাতুন বলেন, `আমি অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। গতকাল শনিবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে সেখান থেকে বাড়িতে আসি। এরপর ঘরে ঢুকে দেখি মনজেলা ঘরের তীরের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলছে। আমি চিৎকার দিলে বাড়ির লোকজন এসে তাঁকে নামিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হই। কিন্তু বাজারের পল্লি চিকিৎসক মনজেলাকে দেখে মৃত বলে জানিয়ে দিলে লাশ নিয়ে আবারও বাড়িতে আসি।’মমতাজ খাতুন আরও বলেন, ‘মনজেলা তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা এবং কাশি রোগে আক্রান্ত ছিল। এ কারণে মনজেলা আত্মহত্যা করে থাকতে পারে। তুহিন এখন কোথায় আছে তা বলতে পারছি না।’মনজেলার বাবা রজিবুল প্রামাণিক বলেন, ‘বিকেল ৫টার দিকে মনজেলার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দেওয়া খবরে জানতে পারি আমার মেয়ে অসুস্থ হয়েছে। দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখতে পাই আমার অন্তঃসত্ত্বা মেয়ের লাশ হয়ে পড়ে আছে। তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মনজেলাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলে ধারণা করছি। মেয়ের গলায় থাকা চেইন এবং কানে থাকা দুল দেখতে পাইনি।’
রজিবুল প্রামাণিক আরও বলেন, ‘মনজেলা ও তুহিন একই সঙ্গে একই স্কুলে লেখাপড়া করা অবস্থায় সম্পর্ক করে। পরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে মেয়েকে বিয়ে দিই। ওদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে এমনটা শুনি নাই। এক মাস আগে জামাইকে মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছিলাম।’পুলিশ লাশের সুরতহাল করার সময় উপস্থিত ছিলেন চোপিনগর ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা সদস্য সালমা খাতুন। তিনি বলেন, লাশের শরীরে পাঁজরে দুই পাশে জখমের চিহ্ন দেখেছিলাম। নারী পুলিশ সদস্যসহ উপস্থিত নারীরা এটা দেখেছেন। পুলিশ সেটার ছবিও তুলে নিয়ে গেছে।
এ বিষয়ে এসআই আবু সাইদ বলেন, অন্তঃসত্ত্বা মনজেলা আত্মহত্যা করেছেন। লাশের শরীরে কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাই নাই। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। প্রতিবেদন এলে বিস্তারিত জানা যাবে।