নিউজ ডেস্কঃ
অগ্রহায়ণ বাংলা ১২ টি মাসের মধ্যে অষ্টম মাস। এটি হেমন্ত ঋতুর দ্বিতীয় মাস। ময়মনসিংহের আঞ্চলিক ভাষায় এ মাসটিকে ডাকা হয় আঘন মাস বলে। কিন্তু এক সময় অগ্রহায়ণ ছিল বছরের প্রথম মাস। ‘অগ্র’ শব্দের অর্থ ‘আগে’ আর ‘হায়ণ’ শব্দের অর্থ ‘বছর’। বছরের আগে বা শুরুতে ছিল বলেই এই মাসের নাম ‘অগ্রহায়ণ’। “অগ্রহায়ণ” শব্দের অভিধানিক অর্থ বছরের যে সময় শ্রেষ্ঠ ব্রীহি (ধান) উৎপন্ন হয়। এক সময় এই সিজনে প্রচুর ধান উৎপাদিত হত তাই এই মাসটিকেই বছরের প্রথম মাস ধরা হত।
আর তাই, পল্লী কবি জসিম উদ্দিন হেমন্তে মাঠ ভরা ফসলের সম্ভারে মুগ্ধ হয়ে ‘নকশী কাঁথার মাঠ’ কবিতায় বলেন‘‘আশ্বিন গেল, কার্তিক মাসে পাকিল ক্ষেতের ধান, সারা মাঠ ভরি গাহিতেছে কে যেন হলদি-কোটার গান। ধানে ধান লাগি বাজিছে বাজনা, গন্ধ উড়িছে বায়, কলমীলতায় দোলন লেগেছে, হেসে কূল নাহি পায়।’’এবং,কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, তিনি (তার গান) আমাদের জাতীয় সঙ্গীতে লিখেছেন,”ওমা অঘ্রাণে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কি দেখেছি মধুর হাসি “।
আজ কার্তিক মাসের ১৯ তারিখ। বাংলাদেশে আবাদি ফসলের মধ্যে ধান অন্যতম। জমিতে ধান এখন আধাপাকা। সপ্তাহ ১০ দিন পর থেকেই ধানকাটা শুরু করবেন ময়মনসিংহের, নান্দাইল উপজেলার ফরিদাকান্দা গ্রামের কৃষক সোনা মিয়া। এই ধান রোপনের পর থেকে কাটা অব্দি পর্যন্ত খরচ খুবই কম। কারণ পানির সেচ দিতে হয় না, লাগে না তেমন সার প্রয়োগও।
খুশির জোয়ার বইছে কৃষক সোনা মিয়া সহ এলাকার অন্যান্য কৃষকের মনেও। অন্য এক কৃষক পত্র মোঃ আজহারুল ইসলাম (ডিপ্লোমা শিক্ষার্থী) বলেন, এখন দিন দিন ঋতু পরিবর্তন হচ্ছে। আগে এই সময় বৃষ্টি কম হয়েছে। কিন্তু এখন প্রচন্ড শীতকালেও বৃষ্টি হয়। গত দুইদিন আগেও বৃষ্টি হয়ে গেল।
কিন্তু সামনে যদি আরো বৃষ্টি হয়, তাহলে আমাদের ধান কাটতে সমস্যা হবে। ফসল নষ্ট হবে। এতে আমরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হব। আমাদের দেশের হিন্দু সমাজের মানুষদের বিশ্বাস অনুযায়ী, অগ্রহায়ণ মাসের বিবাহ হলে তা শুভ হয়। এবং হিন্দুদের পাশাপাশি আমাদের দেশের মুসলমানরাও এখন নবান্ন উৎসব পালন করে থাকে ।