মোঃ শাকিল আহামাদ জেলা প্রতিনিধি রাজশাহী-
রাজশাহী মহানগরীর সিএনবি মোড়ে অবস্থিত একটি বাসভবনের দ্বিতীয় তলায় পদ্মা ক্লিনিক। সম্প্রতি এই ক্লিনিকে এক প্রসূতি নারীর সিজার করার পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরন অবস্থায় আবারও দ্বিতীয়বার অপারেশন করা হয়। পরে প্রসূতির অবস্থা আরও অবনতি হলে স্বজনরা উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়। সেখানেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ঢাকা বেসরকারি হাসপাতালে ২২দিনের ব্যবধানে তার মৃত্যু হয়।জানা যায় (৮ অক্টোবর) মাহমুদা নামে একজন প্রসূতি নারী ডাঃ শিপ্রার কাছে সিজার করবে বলে এই পদ্মা ক্লিনিকে ভর্তি হয়। পরদিন (৯অক্টোম্বর) সকাল ১টার সময় ডাঃ শিপ্রার মাধ্যমে সিজার হয় তার।
সিজারের পর রাতে সেলাই থেকে রক্তক্ষরন শুরু হয়। রক্তক্ষরন শুরু হলে কর্মরত নার্সকে জানায় মাহামুদার পরিবার। নার্সকে জানানোর পরে তারা একটু ধৈর্য ধরেন ঠিক হয়ে যাবে বলেন। তারপরেও যন্ত্রণা এবং রক্তক্ষরন বেশি হতে থাকে সেই প্রসূতি নারী মাহামুদার। অবস্থা খারাপের দিকে গেলে মাহামুদার পরিবার ডাক্তারকে খোঁজ করতে থাকেন।
কিন্তু সেখানে তারা কোন ডাক্তারের খোঁজ পায়না।পরদিন (১০অক্টোম্বর) সকাল ১২টায় ডাক্তার আসলে সমস্যার কথা জানানো হলে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ আবারও সিদ্ধান্ত নেই অপারেশন করার । আবারও অপারেশন শেষ করলেও রুগীর অবস্থার উন্নতি হয় না। ডাক্তারকে জানাই রুগীর অবস্থা ভালো না। তখনই ক্লিনিক থেকে ডাক্তারসহ সকলেই পালানোর মত অবস্থা। রোগীর অবস্থা খারাপ হলে নেওয়া হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আইসিইউতে।রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১দিন থাকার পর রুগীর অবস্থা উন্নত না হলে চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতাল এভার কেয়ারে ভর্তি করা হয়। সেখানে (৩দিন) লাইভ সাপোর্টে থাকার পরে অবস্থার উন্নতি না হলে চিকিৎসা খরচ ব্যয়বহল হওয়ার কারনে সেখান থেকে ঢাকা পপুলার ধানমন্ডি-২ভর্তি করানো হয় মাহামুদাকে।
সেখানে তিনি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে (৩১অক্টম্বর) আনুমানিক সকাল সাড়ে দশটায় মৃত্যু বরন করে।এবিষয়ে মাহামুদার ভাই মো: মাফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন,গত (৮অক্টোম্বর) শুত্রুবার সকালে আমার ছোট বোন মাহমুদা খাতুনকে সিজার করানোর জন্য ভর্তি করা হয় রাজশাহীর সিএনবি মোড়ে অবস্থিত পদ্মা ক্লিনিকে । সেদিন সকাল ১১টার সময় গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাঃ শিপ্রা চৌধরী তার বোনের সিজার করে। সিজার করার পর রাত থেকে শারীরিক অবস্থা ব্যাথা, যন্ত্রণায় চিৎকার শুরু করে। এরপরে আমার বড়বোন নার্সকে জানায়,কিন্তুু ডাক্তার না থাকায় অবস্থা বেশি খারাপ হয়। আমার বোনের ভুল সিজার করায় মৃত্যু বরন করে।মোঃ মাফিকুল ইসলাম আরও বলেন, আমাদের এখন সন্দেহ হয় পরিচালক ডাক্তার ফাইম, ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডাক্তার নাদিয়া আজিম,ডাক্তার ফার্জানা এবং ডাক্তার ইয়াহিয়া ফেরদৌস আলম আবিরের পরিচালনায় ধোঁয়াশা থেকে যায় তারা ডাক্তার কি না।
আমরা চায় এই হাসপাতাল বা ক্লিনিকে আর কেউ যেন ভুল অপারেশন মৃত্যু না হয়। আমরা এর বিচার চাই। তবে বাবার কোলে ফুটফুটে শিশু কিন্তু সিজার করানোর সময় ভুল চিকিৎসায় তার মা মাহমুদা খাতুন মারা গেলেও ভাগ্যক্রমে শিশুটি বেঁচে আছে।এবিষয়ে পদ্মা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য নিতে গেলে তারা প্রথমে তথ্য দিতে অস্বীকার করে। বার বার তথ্য দিবে বলে সময় নিয়ে তথ্য দেয় না । পরে তথ্য দিবে সত্য বলেন আমরা কোন রেকর্ড তথ্য দিব না। আপনারা চাইলে লিখে নিতে পারেন। ত
খন অনুসন্ধান রিপোর্টের জন্য গোপনে অডিও ভিডিও রেকর্ড করা হয়। রুগী মৃত্যুর বিষয়ে পদ্মা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের সিজারে কোন সমস্যা হয়নি, ডাক্তার ডাঃ শিপ্রা সিজার করেছেন উনি ভালো বলতে পারবেন। আমাদের ধারণা রোগীর অতিরিক্ত রক্তখননে বেশি সমস্যা হয়েছে। পরে তার পরিবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তি করে। সেই থেকে আমরা আর কিছুই জানি না। অপারেশনের টাকা রোগীর কাছে থেকে নিয়েছেন কি না প্রশ্নে তারা বলেন আমরা ছাড় দিয়েছি মানবতার খাতিরে ।
রাতে ডাক্তার থাকে না অভিযোগে বলেন সেই দিন মৌ নামে ডাক্তার ছিল,কিন্তুু ডাঃ মৌ এর কোন তথ্য দিতে অস্বীকার করে সাংবাদিকদের কাছে।এবিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন,আমার কাছে এরকম কোন অভিযোগ আসেনি। পদ্মা ক্লিনিকে ডাক্তার থাকে না অভিযোগে রাজশাহী সিভিল সার্জন জানান, আপনিও জানেন যেসব প্রতিষ্ঠানে অপারেশন, ইনজেকশন এগুলো নিয়ে কাজ হবে সেখানে সবসময় ডাক্তার থাকতে হবে। আর ডাক্তার থাকে না বিষয়ে আমি খুব শীঘ্রই অভিযান করব এবং অভিযোগের সত্যতা পেলে পদ্মা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।